বাংলাদেশের বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর 2024

বাংলাদেশের বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর 2024
5/5 - (5 votes)

বাংলাদেশের বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর গুলো সম্পর্কে জানা প্রত্যেক বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের মধ্যে দুশ্চিন্তার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে কোথায় টাকা জমাবেন বা কোথায় ইনভেস্টমেন্ট করবেন। এর কারণ হচ্ছে কোথাও টাকা রাখার আগে আপনাকে দুটি বিষয় অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে ভাবতে হবে।

সঞ্চয় করার পূর্বে যা ভাবা উচিত: 

  1. টাকার নিরাপত্তা;
  2. মুনাফা বা প্রফিটের পরিমান। 

এই দুটি বিষয় যদি আপনি হালকাভাবে নেন বা আপনার ভুল সিদ্ধান্তের জন্য আপনি সারাজীবন পস্তাবেন। শুধু তাই নয়, আপনি আপনার সব টাকা হারাতে পারেন। 

আজকের আর্টিকেলে জানবেন বাংলাদেশের সবগুলো বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর নিয়ে এবং এর মধ্যে আপনার জন্য কোনটি হবে। আপনার কষ্টার্জিত টাকা কোথায় ইনভেস্ট করলে আপনি 100% নিরাপদ থাকবেন এবং খুব ভালো প্রফিট রিটার্ন পাবেন সে সম্পর্কে তাই। পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। তাহলে আপনি আপনার নিজের জন্য একটা ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে, আপনার জন্য কোথায় ইনভেস্ট করলে ভালো হয়। তাহলে চলুন শুরু করি।

বাংলাদেশের বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর 

বেস্ট ইনভেস্টমেন্ট সেক্টর বলতে আমি বুঝি যেখানে আপনি আপনার অর্থ ইনভেস্ট করে কোনরকম দুশ্চিন্তা ছাড়াই হালাল ভাবে অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারবেন। হতে পারে সেটা ব্যাংক বা রিয়েল এস্টেট বা অন্য কোন কিছু।

ব্যাংকে ডিপিএস বা এফডিআর 

বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর এর সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ উপায় হচ্ছে ব্যাংকে ডিপিএস করা বা এফডিআর করা। বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যাংক ভেদে ডিপিএস বা এফডিআর এ বাৎসরিক (৩) তিন থেকে (আট) ৮% পর্যন্ত ইন্টারেস্ট পাওয়া যায়।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে হারে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে ব্যাংকে টাকা রেখে উলটো মানুষের লাভের পরিমাণের তুলনায় লোকসান হচ্ছে।  

দৈনিক প্রথম আলোর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যাংকে একশ টাকা রাখলে এক বছর পর আমানতকারীরা প্রকৃতপক্ষে পাচ্ছেন ৯৪,৯৯ টাকা। 

যেখানে ব্যাঙ্কে টাকা রাখলে আপনার লাভ হওয়ার কথা সেখানে মূল্যস্ফীতির জন্য আপনার উল্টো লস হচ্ছে। 

তবুও আপনি যদি ছোট ছোট সঞ্চয় করতে চান, ধরুন প্রতি মাসে পাঁচশ, একশো করে তাহলে যে কোনো ব্যাংকে এফডিআর বা ডিপজিট করা হবে আপনার জন্য বেস্ট ডিসিশন। 

সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগ বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর

সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগের উপর সকলের আস্থা এবং বিশ্বাস রয়েছে শতভাগ। এর কারণ হলো সঞ্চয়পত্রে খুব ভালো মুনাফা পাওয়া যায় এবং আপনার টাকা 100% থাকবে। দেশের সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে সঞ্চয়পত্র নির্ভরযোগ্য ইনভেস্টমেন্ট খাত হিসাবে বেশ পরিচিত। সঞ্চয়পত্রে টাকা রেখে আপনি বাৎসরিক ১১ থেকে ১২ শতাংশ মুনাফা পেতে পারেন।

সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগের অসুবিধা 

সাম্প্রতিক সময়ে সঞ্চয়পত্র নিয়ে বেশ কিছু নতুন নিয়ম কার্যকর করেছে সরকার। যে কারণে বিপাকে পড়েছে দেশের জনগণ। এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে ভাটা পড়েছে। যেসকল নতুন নিয়মগুলির কারণে সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগের অসুবিধা হয়েছে তা হলো:

  • ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র ক্রয় করার ক্ষেত্রে ট্যাক্স রিটার্নের কপি জমা দিতে হবে; 
  • ১৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনলে মুনাফার হার কমে যাবে।

তো আপনার হাতে যদি এই মুহূর্তে টাকা থাকে, আপনি চাইলে সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগ ক্রয় করে রাখতে পারেন। তাহলে আপনি সঞ্চয়পত্র থেকে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সময় পর ভালো মুনাফা রিটার্ন পাবেন এবং আপনার টাকাও সেফ থাকবে। 

শেয়ার বাজার বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর

শেয়ার বাজারে ইনভেস্ট করে আপনি (২) দুইভাবে ইনকাম করতে পারেন। এক হচ্ছে আপনি 

  • কম দামে শেয়ার কিনে বেশি দামে শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন;
  • আপনি শেয়ার ডেভিডেন্ট থেকে আয়ে কর পারেন৷ 

অর্থাৎ আপনি যদি কোনও ভালো কোম্পানির শেয়ার কিনে রাখেন তাহলে প্রতি বছর আপনি আপনার ক্রয়কৃত শেয়ারের উপর মিনিমাম ১০-২৫ দিন বা তারও বেশি লাভ সংগ্রহ করতে পারেন। 

কিন্তু বাংলাদেশের শেয়ার মার্কেট অস্থিতিশীল। যে কারণে এখানে মানুষের আস্থা খুবই কম। তবে আপনি যদি শেয়ার মার্কেট ভালভাবে স্টাডি করে পরিকল্পনামাফিক বিনিয়োগ করেন তাহলে আপনি এই শেয়ার বিনিয়োগের মাধ্যমে ভালো ইনকামের সুযোগ তৈরি করতে পারবেন। 

মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগ বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর

পৃথিবীর অন্য দেশে মিউচুয়াল ফান্ড খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু বাংলাদেশে মিউচুয়াল ফান্ড এখনও ততটা জনপ্রিয়তা পায়নি৷ এর কারণ হচ্ছে মিউচুয়াল ফান্ড সম্পর্কে মানুষের ধারণা খুবই কম। মিউচুয়াল ফান্ডের কোম্পানিগুলোকে সংক্ষিপ্ত ভাষায় বলা হয় (AMC) এএমসি।

অর্থাৎ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি প্রত্যেকটি মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানির কিছু দক্ষ ফান্ড ম্যানেজার থাকে, যারা আপনার বিনিয়োগকৃত অর্থ ইক্যুইটি বন্ড শেয়ার মার্কেট, রিয়েল এস্টেট অথবা অন্য কোনো সিকিউরিটিজে অর্থ বিনিয়োগ করে এবং সেই বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত লাভের অংশ মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর 2024
বাংলাদেশের বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর 2024

প্রত্যেকটি মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানির বেশ কিছু স্কিম থাকে। আপনি চাইলে মাত্র পাঁচশ টাকা দিয়ে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন। মিউচুয়াল ফান্ডে ঝুঁকি নেই তা কিন্তু নয়। মিউচুয়াল ফান্ডে ঝুঁকি আছে। তবে আপনি যদি মিউচুয়াল ফান্ডে ইনভেস্ট করার আগে মার্কেট যাচাই করে ভাল কোনও মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন তাহলে আপনার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে। 

মিউচুয়াল ফান্ড ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যমে আপনি বাৎসরিক খুব ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। 

ল্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সেক্টর

বাংলাদেশে জমি বা ল্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট। অর্থাৎ আপনি জমি কিনে রেখে পরবর্তীতে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনাকে ভালো ল্যান্ড খুঁজে বের করতে হবে। আপনাকে জমির দলিলাদি সহ যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে কিনতে হবে। তা না হলে আপনি কিন্তু ঠকতে পারেন। 

কিন্তু ল্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, আপনি যদি ল্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট করতে চান তাহলে আপনার অনেক বড় পুঁজি দরকার হবে। যে কারণে ল্যান্ড ইনভেস্টমেন্টে  বিনিয়োগ করা সবার জন্য সুবিধা জনক নয়। তবে আপনার কাছে যদি পর্যাপ্ত পুঁজি থাকে তাহলে আপনি চোখ বন্ধ করে ল্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট করতে পারেন। 

ফ্ল্যাট বিনিয়োগ বেস্ট ইনভেসমেন্ট

এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইনভেস্টমেন্টের সবচেয়ে সিকিউর এবং লাভজনক ক্ষেত্র  হচ্ছে ফ্ল্যাট ক্রয়। এর উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে বিগত ২১ বছরে ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে গড়ে ৫৩৯%। যেটা প্রতিবছর দাম বাড়ছে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ হারে। বাংলাদেশের এমন কম ইনভেস্টমেন্ট সেক্টর আছে, যেটা প্রতিবছর ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

এখন আপনার মাথায় হয়তো একটা প্রশ্ন ঘুরছে যে ফ্ল্যাট কিনতে হলে তো অনেক টাকা দরকার। আমার কাছে অত টাকা নেই। তাহলে আমি কিভাবে ফ্ল্যাটে ইনভেস্ট করবো? 

ফ্ল্যাট ক্রয় করার প্রসেস 

দেখুন ফ্ল্যাট কেনার জন্য আপনাকে কিছুটা পরিকল্পনামাফিক এগোতে হবে। কারণ ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে আপনাকে একবারে পুরো টাকা দিতে হবে না। আপনাকে প্রসেস টা একটু বুঝিয়ে বলি, বাংলাদেশে ২ (দুই) ধরনের ফ্ল্যাট পাওয়া যায় আর তা হচ্ছে: 

  • রেডি ফ্ল্যাট (যেটা আপনি চাইলে আজকে কালকে ফ্লাটে উঠে যেতে পারবেন)। 
  • অন গ্রিন প্রজেক্ট (অন গ্রিন প্রজেক্ট টা হচ্ছে যে এটা কোনো ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি মাত্র কাজ শুরু করেছে সেটা হয়তো কাজটা শেষ করতে দুই বছর বা তিন বছর সময় লাগতে পারে)। 

এখন আপনি যদি কোনও রেডি ফ্ল্যাট কিনতে চান তাহলে আপনাকে ১০০% পেমেন্ট করতে হবে। শুরুতে ফ্ল্যাট ভ্যালুর ৩০% বুকিং দিতে পারবেন বাকিটা ফ্ল্যাট হ্যান্ডওভার আগে আপনি ব্যাঙ্ক লোন নিয়ে পরিশোধ করতে পারবেন। 

ফ্ল্যাট বিনিয়োগ এর সুবিধা

তবে আপনার কাছে যদি ইনস্ট্যান্ট টাকা না থাকে তাহলে আপনি যেটা করতে পারেন, তা হলো যে কোনও মূল্যের প্রোজেক্টে ফ্ল্যাট ক্রয় করতে পারেন। তাহলে আপনি হ্যান্ডওভার এর আগে দুই থেকে তিন বছরের মতো সময় পাবেন। শুরুতে আপনি পাঁচ থেকে দশ লাখ টাকা দিয়ে বুকিং দিতে পারবেন। পরবর্তীতে প্রতি মাসে কিস্তিতে পরিশোধ করবেন। ফাইনালি দেড় থেকে দুই বছর, তিন বছর পরে ফ্ল্যাট হ্যান্ডওভার আগে আপনি আপনার অ্যাকাউন্টে যেকোনো ব্যাংক লোন নিয়ে পুরো টাকা পরিশোধ করে আপনি ফ্লাট নিজের করে নিতে পারবেন।এক্ষেত্রে আপনি কিন্তু অনেক বড় একটা সময় পাচ্ছেন।CF

ফ্ল্যাট বিনিয়োগ এর অসুবিধা

তবে ফ্ল্যাট কেনার আগে আপনাকে অবশ্যই কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে তা হচ্ছে, আপনি ভাল কোম্পানি থেকে ফ্ল্যাট বুকিং দেবেন। মার্কেটে এমন অনেক রিয়েল এস্টেট কোম্পানি আছে যেখানে টাকা ইনভেস্ট করার পর আপনাকে তাঁদের পিছু পিছু ঘুরতে হবে। 

কারণ তাদের কমিটমেন্ট ঠিক থাকেনা। ডকুমেন্টস নিয়ে ঝামেলা করে। আপনাকে ঠিক ভাবে রেজিস্ট্রি দিবে না ইত্যাদি আরো অনেক রকমের সমস্যায় পড়তে পারেন।

তবে আপনি যদি কোন ফ্ল্যাট বুকিং দিতে চান তাহলে আমি আপনাকে সাজেস্ট করব (Amble Properties Ltd) অ্যাম্বেল প্রপার্টিজ লিমিটেড বা এপিএল। এর কারণ হচ্ছে এই কোম্পানি ২০০৭ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে বসুন্ধরা, গুলশান, মিরপুর, আফতাবনগর, বনশ্রীতে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০ টিরও বেশি প্রজেক্ট হ্যান্ডওভার করছে।

বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর সম্পর্কে ভিডিও

শেষ কথা

আজকের এই আর্টিকেলে বাংলাদেশের বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর গুলো সম্পর্কে ধাপে ধাপে বর্ণনা করেছি । আপনি যদি এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে আপনি নিজেই বাংলাদেশের বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারণা পেয়েছেন। এরপরেও যদি বাংলাদেশের বেস্ট ইনভেসমেন্ট সেক্টর এর সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকে তাহলে কমেন্ট সেকশনে আপনার মূল্যবান মতামত দেখুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe now

Give us a call or fill in the form below and we will contact you. We endeavor to answer all inquiries within 24 hours on business days.