বর্তমান সময়ে বিদেশগামী নাগরিকগণ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ভিসা দিয়ে লোন নিতে পারবেন। তবে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম ২০২৪ এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সেই সাথে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন ফরম পূরণ সম্পর্কে অনেকেরই জানার আগ্রহ রয়েছে।
আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের জানাবো কিভাবে আপনি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ভিসা দিয়ে লোন নিতে পারবেন এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোনের জন্য আবেদনের পাশাপাশি লোন নেবার আবেদন ফরম পূরণ করবেন তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবব।
আরো পড়ুনঃ জরুরী লোন বাংলাদেশ থেকে নেওয়ার 100% কার্যকরী উপায়
তাই আপনি যদি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোনের জন্য আবেদন করতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেল আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন সুবিধা এবং অসুবিধা, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন আবেদন প্রক্রিয়া, কিভাবে বিদেশ যেতে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করবেন তা সম্পর্কে নিচে নেয়া পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক লোন কি?
গরিব এবং অসহায় বেকার লোকদের বহির বিশ্বে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে ক্ষুদ্র ঋণ দিতে ২০১১ সালে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক তৈরি হয়। এই ব্যাংকের সূচনার পর থেকে প্রবাসী ঋণ গ্রহণকারীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক লোন নিতে হলে অবশ্যই আপনাকে বাংলাদেশের বৈধ ভিসা গ্রহণ করতে হবে তবেই আপনি এই ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। সাধারণত ৯ শতাংশ সরল সুদে আপনি সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নেওয়ার পদ্ধতী
বাংলাদেশের নাগরিক যারা কাদের উদ্দেশ্যে বিদেশে প্রবাস জীবন যাপন করতে যাচ্ছেন তাদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করছে।
আবার অনেক প্রবাসী রয়েছে যারা বিদেশে গিয়ে কোন কাজকর্ম করে সফল হতে পারছেন না এমত অবস্থায় দেশে ফিরে আসছেন তাদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন প্রদান করছে।
আরো পড়ুনঃ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন অনলাইন আবেদন
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কর্তৃক ভিসা দিয়ে লোন নেবার ক্ষেত্রে কোন ধরনের স্থাবর বা সহ এর সম্পত্তি জামানত কিংবা বন্ধক রাখতে হবে না। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কর্তৃক ভিসা দিয়ে লোন নেয়ার আবেদন প্রক্রিয়া সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে লোন পাওয়ার জন্য আপনি যোগ্য কিনা তা সাত দিনের মধ্যেই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাকে জানিয়ে দিবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: যদিও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ খোলাসা ভাবে সর্বসাধারণের জন্য একটি কথা হাইড করে রাখে আর তা হচ্ছে, জামাত। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থেকে যদি আপনি ঋণ সহায়তা পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে দুইজন ব্যক্তি জামিনদার থাকতে হবে। ঋণ সহায়তা পেতে আপনি দুইজন ব্যক্তিকে জামিনদার করতে পারবেন তা নিচে তুলে ধরা হলো:
- প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ভিসা দিয়ে লোন নিতে গেলে আপনাকে প্রথম যে জামিনদার ব্যক্তি রাখতে হবে তা আপনার বংশের যেকোনো সরকারি চাকরিজীবী হতে হবে। আপনার নিকটাত্মীয় হলেও হবে কিন্তু তিনি বাংলাদেশের যেকোনো সরকারি চাকরিজীবী হতে হবে। যদিও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি কোথাও লিখিত আকারে উল্লেখ করেনি। কিন্তু যখন আপনি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে যাবেন তখন এই সমস্যার সম্মুখীন হবেন।
- এরপরে আপনি যাকে জামিনদার হিসেবে রাখতে পারবেন তিনি হচ্ছেন আপনার এলাকার পরিচিত অথবা প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি। ব্যাপারটি নেককারজনক হলেও সত্যি যে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই পরিচিত একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব এবং অপর আরেকজন সরকারি চাকরিজীবী যা আপনার বংশের অথবা নিকটাত্মীয় এই দুজন জামিনদার প্রয়োজন হবে। যদিও এই দুজন জামিনদার ব্যক্তি সম্পর্কে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোথাও লিখিত আকারে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেনি কিন্তু আমি আমার পার্সোনাল এক্সপেরিয়েন্স আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি।
ভিসা দিয়ে লোন নেবার উপায়
প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক থেকে ভিসা দিয়ে লোন নিতে হলে অবশ্যই আপনার যে ভিসা রয়েছে তা বৈধ হতে হবে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাকে ভিসা তৈরি করে দিবে না, অর্থাৎ আপনার ভিসা আপনাকে নিজেই তৈরি করে নিতে হবে। আপনার ভিসার মেয়াদ এর উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক আপনাকে ঋণ প্রদান করবে।
আরো পড়ুনঃ সহজ কিস্তিতে পার্সোনাল লোন কিভাবে নিবেন
নতুন ভিসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিন বছর মেয়াদী সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন।
রি-এন্ট্রি ভিসার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র দুই বছর মেয়াদে এই ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন যার গ্রেস পিরিয়ড থাকবে কেবলমাত্র দুই মাস। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে যে লোন আপনি গ্রহণ করবেন তার সুদের হার সরল সুদে মাত্র ৯ শতাংশ হবে।
একটি গবেষণায় উঠে এসেছে সাধারণত সৌদি আরব, কুয়েত, ওমান, কাতার, বাহরাইন, এসব দেশে কর্মে ইচ্ছুক প্রবাস গামী ব্যক্তিরাই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কর্তৃক লোন নেয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি আবেদন করেন।
ভিসা দিয়ে লোন নিতে কী কী প্রয়োজন
কর্মস্থলের ক্ষেত্রে বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক কর্তৃক ভিসা দিয়ে লোন পেতে চাইলে অবশ্যই ব্যক্তির বৈধ ভিসা থাকতে হবে। যে ভিসার মাধ্যমে আপনি লোনের আবেদন করবেন সেই ভিসা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাকে তৈরি করে দিবে না বরং আপনার ভিসা আপনাকে নিজেই তৈরি করে নিতে হবে।
ভিসা দিয়ে লোন নিতে গেলে আপনাকে কোন ধরনের টাকা দিতে হবে না। সেই সাথে আপনি লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন ব্যাংকের নির্ধারিত আবেদন ফরমে। তবে সে ক্ষেত্রে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে আপনার একটি হিসাব একাউন্ট খুলতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ব্যাংকে কত টাকা রাখলে ট্যাক্স দিতে হয় বিস্তারিত জেনে নিন
তবে আপনি যে দেশে কাজের উদ্দেশ্যে যাবেন যে কোম্পানিতে আপনি কাজ করবেন সেই কোম্পানির নিয়োগ পত্র আপনাকে প্রদান করতে হবে। সেই সাথে ঋণ গ্রহণের জন্য আবেদনকারীর সদ্য তোলা সত্যায়িত চার কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা প্রমাণ করার জন্য পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সনদ গ্রহণ করতে হবে।
আমরা বাঙালি যে বিষয়টাকে চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট অথবা নাগরিকত্ব সনদ বলে জানি , ভ্যালিডিটি পাসপোর্ট ও অরিজিনাল ভিসার কপি, ম্যান পাওয়ার স্মার্ট কার্ডের ফটোকপি এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের/ভোটার আইডি কার্ড (এনআইডি) কার্ডের ফটোকপি সাবমিট করতে হবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: দুজন জামিনদারের এক কপি করে পাসপোর্ট সাইজের ছবি, এনআইডি কার্ডের ফটোকপি, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা সংবলিত পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক সত্যায়িত সনদ। এবং জামিনদারদের যেকোনো একজনের স্বাক্ষর করা সহ যেকোনো ব্যাংকের তিনটি চেকের ফাঁকা পাতা জমা দিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ সকল ব্যাংকের ডাবল বেনিফিট স্কিম | ডাবল বেনিফিট ডিপোজিট স্কিম 2024
এজন্যই আর্টিকেলের উপরে অংশে আমি আপনাকে বলেছিলাম অবশ্যই যে ব্যক্তি আপনার জামানতদার হবে তাকে সরকারি চাকরিজীবী এবং নিকট আত্মীয় অথবা নিজের বংশের কাউকে হতে হবে। কেননা নিজের বংশীয় অথবা নিকট আত্মীয় ব্যক্তি ছাড়া কেউ আপনাকে ব্যাংকের চেকের খালি পাতা সই করা সহ দিবেনা।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আবেদন করার সময় আপনি যে একটি সচল মোবাইল নাম্বার দিবেন সেই নাম্বারে আপনাকে প্রবাসী কল্যাণ করতে একটি মেসেজ পাঠিয়ে দিবে যে আপনার ঋণের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে কিনা।
Homepage | Upension |
Category | Loan |
Last Update | Just Now |
Written by | Ashraful Islam |